সূরা আর রাহমানের বর্ণিত দুই সাগরের অন্তরালের ব্যাপারে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

📕📘দুই সাগরের অন্তরাল ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাঃ

👉👉 দুই সাগরের অন্তরালের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
“তিনি প্রবাহিত করেন দুই সমুদ্র, যারা পরষ্পর মিলিত হয়, কিন্তু তাদের মধ্যে রয়েছে এক অন্তরাল যাারা অতিক্রম করতে পারে না। অতএব,তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে”
–সূরাহ আর-রহমান : ১৯-২১

👉👉পৃথিবীর জ্ঞানী মানুষ বিশেষ করে যারা এই সুফল নিয়ে গবেষণা করে ওই তাবৎ মানুষের নিকট একথা দিবালোকের মত স্পষ্ট যে, দুই সগারের মিলনস্থলে অন্তরালেও আল্লাহর নিদর্শন বিদ্যমান। যা কার্যত দু’টি সাগরকে পৃথক করে রাখে এবং স্ব স্ব সাগরের নিজস্ব তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, ঘনত্ব ইত্যাদি স্বাতন্ত্রতা বজায় রাখে। দু’টি সাগরের মিলনস্থলে পানি ছোট একটি সমসত্ত্ব এলাকা গঠিত হয়, যা দু’টি সাগরের বৃহত্তর এলাকার পানিকে মিশ্রিত হতে দেয় না। আর এই প্রত্যেক শ্রেণীর পানিতে ভিন্ন রকম স্বাদ, ভিন্ন রকম প্রাণী এবং ভিন্ন রকম জীবন ব্যবস্থা রয়েছে।
পৃথিবীর এক প্রান্তের নদীতে বা সমুদ্রে যে সকল প্রাণীরা বসবাস করে পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তের নদীর সমুদ্রে সেই সকল প্রাণী ও জীবজন্তু বসবাস করে না। আমাদের বাংলাদেশের দুই একটি নদীতে কেবল ইলিশ মাছ পাওয়া যায় অথচ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নদী সমুদ্রে বহু চেষ্টা করেও তা উৎপাদন করা সম্ভব নয়।।
আবার সারডিন মাছ বাংলাদেশের সমুদ্রে পাওয়া যায় না। পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু মাছ শ্যালমন বাংলাদেশে কোথাও পাওয়া যায় না।
প্রত্যেক শ্রেণীর পানির ভিন্ন ভিন্ন প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট আছে। দুই সাগরের কেমিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল উপাদানেরও বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান যা সাম্প্রতিক কালে জানা গেছে মাত্র।
এই পানির অন্তরালের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হচ্ছে যে, সেগুলোতে বৈদ্যুতিক পজিটিভ ও নেগেটিভ আকর্ষণ বিশিষ্ট লবণের স্থূলাণু রয়েছে।
যার কারণে সদৃশ আকর্ষণ বিশিষ্ট পানি তার পার্শস্থ পানি থেকে দূরে সরে থাকে। এবং নিজেকে আলাদা করে রাখে।।
এই সূক্ষ্ম জ্ঞান অবশ্যই আরবের নিরক্ষর নবী মুহাম্মদ সাঃ এর ছিল না। নিশ্চয়ই তাকে কেউ একজন জানিয়েছেন। আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে এত সুক্ষ জ্ঞান একজন নিরক্ষর মানুষ তো দূরের কথা তৎকালীন একজন জ্ঞানী মানুষ ও জানতেন না। তাহলে একজন লেখাপড়া না জানার লোক এ কি করে হঠাৎ করে এমন গভীর প্রজ্ঞা পূর্ণ কথা বলা শুরু করলেন???
নিশ্চয়ই তাকে কেউ একজন জানিয়েছেন।
আর তিনি আল্লাহ। যিনি তার দূত জিব্রাইল আঃ কে পাঠিয়ে একজন নিরক্ষর নবীকে এমন জ্ঞান দিয়েছেন যে জ্ঞান পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আর কেউ কোনোদিন আয়ত্ত করতে পারবেনা এবং সম্ভবও নয়।।

যাই হোক, বিজ্ঞানীদের অভিমত হলো এই পজিটিভ ও নেগেটিভ আকর্ষণের কারণেই দুই পানির মধ্যে অন্তরাল সৃষ্টি হচ্ছে এবং এটাই বিভিন্ন শ্রেণীর পানির মধ্যে আনুভূমিক উঁচু-নীচু লম্বা পর্দা সৃষ্টি করছে।
বর্তমান শতাব্দী তথা স্যাটেলাইটের যুগে সমুদ্রতত্ত্ববিদগণ আবিষ্কার করেছেন যে, বিভিন্ন শ্রেণীর লোনা পানির মধ্যে অন্তরাল রয়েছে। আর এই তথ্যটি আল-কুরআন ১৫শ বছর পূর্বেই আমাদের রাসূল মুহাম্মাদ সঃ এর মাধ্যমে প্রকাশ করেছে স্বয়ং আল্লাহ। যা সূরাহ আর-রহমানের উক্ত আয়াতসমূহের তথ্য সম্বন্ধে খুবই সূক্ষ্ম ও নিপুঁণ বর্ণনা দিয়েছে।
সুতরাং পবিত্র সেই সুমহান প্রভু, যিনি ইরশাদ করেনঃ “এই কুরআন আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো রচনা নয়, পক্ষান্তরে তার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে এটা তার সমর্থন এবং তার বিধানসমূহের বিশদ ব্যাখ্যা। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তা জগতসমূহের প্রভূর পক্ষ হতে”। –সূরাহ ইউনুস : ৩৭!!
👉👉তথ্য সূত্র : সৃষ্টিতত্ত্বে আল্লাহর অস্তিত্ব, কুরআন-সুন্নায় বিজ্ঞানের অলৌকিক তথ্যÑকুরআন-সুন্নায় বৈজ্ঞানকি তথ্য গবেষণার আন্তর্জাতিক কমিশন (অনু. মো. মুহসিন) পৃঃ৪১-৪২।

Leave a comment